আলাউদ্দিন সিকদার:
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৩ সংলগ্ন থাইংখালী তাজনিমারখোলা এলাকার একমাত্র খেলার মাঠ ব্যবহারে স্থানীয়রা বাধার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাদের অভিযোগ, গত একমাস ধরে স্থানীয় খেলোয়াড়েরা এই মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না। অন্যদিকে রোহিঙ্গারা নিয়মিত খেলাধুলা করতে পারছে।
স্থানীয় খেলোয়াড়েরা বলেন, “আমরা খেলাধুলা করতে পারছি না প্রায় একমাস। খেলতে গেলে ক্যাম্প-১৩ এ দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর সদস্যরা বাধা প্রদান করে। গত কয়েকদিন ধরে লকডাউনের কথা বলে আমাদের ঢুকতেও দিচ্ছে না ক্যাম্প এরিয়ায়।
স্থানীয় খেলোয়াড়েরা অভিযোগ করে বলেন, “গত একমাসসহ লকডাউন চলাকালীন সময়েও রোহিঙ্গারা খেলাধুলা করছে ওই মাঠে। সাথে এপিবিএন পুলিশ সদস্যরাও খেলে। শুধু আমরা খেলতে গেলে বাধা প্রদান করে। এপিবিএন সদস্যরা বলে, এই মাঠে স্থানীয়দের অধিকার নেই, এখানে রোহিঙ্গারা খেলতে পারবে।”
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, তাজনিমারখোলা মাঠের অবস্থান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের বাইরে। থাইংখালী-তেলখোলা সড়ক ঘেঁষে এটির অবস্থান।
স্থানীয়রা বলছে, মাঠের অবস্থান অনুযায়ী এটিতে থাকবে স্থানীয়দের অধিকার। কারণ, কাঁটাতারের ভেতরের সবকিছু রোহিঙ্গাদের জন্য নির্ধারিত। আর বাইরে স্থানীয়দের জন্য।
স্থানীয় খেলোয়াড় ফাহিম বলেন, “রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে বেশ কয়েকবছর ধরে স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা মিলেমিশে খেলে আসছি। কিন্তু গত একমাস ধরে এখন আমরা নিজেরাই খেলতে পারছি না। তারা খেলতে পারছে।”
স্থানীয় সংগঠন তাজনিমারখোলা স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন সোহেল বলেন, “আমাদের একমাত্র খেলার মাঠ ফিরিয়ে দিতে হবে। স্থানীয় ছেলেদের জন্য এটি একমাত্র বিনোদনের ক্ষেত্র। এই মাঠ আমরা রোহিঙ্গাদের দিয়ে দিতে চাই না।”
এ সময় সংগঠনের অন্যান্যরাও মাঠে স্থানীয়দের অধিকার নিশ্চিত করতে দাবি জানান।
তাজনিমারখোলা খেলার মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন বলেন, “দীর্ঘ ১৫ বছর আগে এই মাঠের সৃষ্টি হয়েছে। এই মাঠ তৈরি করতে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এরপর থেকে এলাকার ছেলেরা এই মাঠে নিয়মিত খেলত। কিন্তু গত একমাস ধরে প্রশাসনিক বাধা আর রোহিঙ্গাদের কারণে খেলতে পারছে না।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন বলেন, “এটা প্রকৃতপক্ষে স্থানীয়দের মাঠ। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্রকল্প থেকে এ মাঠ সংস্কার করা হয়। মাসখানেক ধরে মাঠ নিয়ে ঝামেলা চলছে। এটা কতৃপক্ষের সাথে বসে সমাধান করতে হবে।”
০৫নং পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “স্থানীয়রা তাদের নিজেদের মাঠে না খেলে কোথায় খেলবে। এর আগেও এই মাঠ দখল করতে পায়তারা চালিয়েছিলো অনেকে। ইতোমধ্যে স্থানীয়দের আরও অনেক মাঠ দখলে চলে গেছে। তাজনিমারখোলা মাঠে স্থানীয়দের অধিকার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।”
তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৩ এর দায়িত্বরত এপিবিএন ইনচার্জ মাহবুব বলেন, “এই সমস্যাটি সংশ্লিষ্ট সবার সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাধান করা হবে।”
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আসছি আমি তেমন কিছু জানিনা। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।