কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে উজু ও সুজিন কোরিয়া নামে দুইটি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্ট ভেঞ্চারকে নিয়োগ দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক সংক্রান্ত এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিকেলে অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় এ তথ্য জানান।
সামসুল আরেফিন জানান, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসাবে উজু ও সুজিন কোরিয়া নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্ট ভেঞ্চারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ কাজে ব্যয় হবে ৪১ কোটি ৩০ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
জানা গেছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের বাস্তবায়ন তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের লক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে রিকুয়েস্ট ফর প্রপোজাল (আরএফপি) ইস্যু করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠানই প্রস্তাব দাখিল করে। তার মধ্যে দুইটি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হয়। প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট ভেঞ্চার উজু ও সুজিন কোরিয়াকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী জানান, আজকের ক্রয় সংক্রান্ত সভায় ১২টি প্রস্তাবনা বিবেচনায় নিয়েছি। আরেকটি প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রত্যাহার করে নিয়েছে। প্রস্তাবনার মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তিনটি, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের দুইটি, বিদ্যুৎ বিভাগের দুইটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একটি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবনা আমরা বিবেচনায় নিয়েছি।
সভায় খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় রামগড় স্থল বন্দর উন্নয়নের পূর্ত কাজ ১২৩ কোটি ৯১ লাখ ৭১ হাজার ৪৬৩ টাকায় ঢাকার মনিকো লিমিটেডকে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক উম্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করার পর এই কাজটি করার জন্য ছয়টি দরপত্র জমা পড়েছিল। সেখান থেকে সর্বনিম্ন দরদাতাকে বেছে নেওয়া হয়।
অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, ২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের (৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের ৯৮টি লটের মধ্যে ৪৬টি লটে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২১ হাজার ১৯০ কপি বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে ৭৩ কোটি ৮২ লাখ ৮১ হাজার ১৪০ টাকায় ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২১ হাজার ১৯০ কপি বইয়ের কাজ দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক উম্মুক্ত পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হলে মোট ৩০১টি দরপত্র জমা পড়েছিল জানিয়ে এর মধ্যে ২৮৬টি দরপত্র টিকেছিল। কারিগরি কমিটির সুপারিশের আলোকে সর্বনিম্নি দরদাতাকে বেছে নেওয়া হয়।
বৈঠকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিতরণ ট্রান্সফরমার ও পোল কেনার দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। একটি প্রস্তাবে ৮৪ কোটি ৪২ লাখ৬৭ হাজার ৫১৩ টাকায় ১৩ হাজার ৪০টি ট্রান্সফরমার এবং আরেকটি প্রস্তাবে বাংলাদেশ মেশিন ট্যুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ৭১ কোটি ২৩ লাখ ২১৯২ টাকায় ৫১ হাজার ৩৫৯টি এসপিসি পোল বা খাম্বা কেনার কথা বলা হয়। নেত্রকোনা শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা ৪৯৮ দশমিক ৪৫ একর ভূমি উন্নয়ন কাজ ২৩৯ কোটি ৫৫ লাখ ৪৬৮৩২ টাকায় ঢাকার এম/এস নুরুজ্জামান খানকে দেওয়া হয়।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এদিন ২০২১-২২ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রোটিন মাত্রার ৫০ হাজার টন গম আমদানির জন্য জন্য সিঙ্গাপুরভিত্তিক অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনালকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
সামসুল আরেফিন বলেন, আন্তর্জাতিক কোটেশন আহ্বান করা হলে একটি দরপত্র জমা পড়ে। সিঙ্গাপুরের অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি কারিগরি কমিটির যাচাই বাছাইয়ে টিকে যায়। ফলে তারা ২ কোটি ১০ লাখ ৬৯ হাজার ডলার বা ১৭৯ কোটি ৫০ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫০ টাকায় ৫০ হাজার টন গম সরবরাহের অনুমোদন পায়। প্রতি টনের দাম ধরা হয়েছে ৪২১ দশমিক ৩৮ ডলার। রাশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, রোমানিয়া, ইউক্রেন থেকে গম সংগ্রহ করে তারা সরবরাহ করবে।