নিজন্ব প্রতিবেদক:
উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের বাসিন্দা ইয়াবা সম্রাট আলী আহাম্মদ, রাজ্জাক, বিজয়, রুবেলসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র ২০১৬ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা পাচার কর আসছিল।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, বান্দরবান সহ দেশের বিভিন্ন থানায় তাদের বিরোদ্ধে মাদকের মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। ইয়াবা সহ বারবার আটক হলেও জেল থেকে জামিনে এসে পুনরায় ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাই।
ইয়াবা সম্রাট আলী আহাম্মদ, রাজ্জাক, বিজয়, রুবেল সিন্ডিকেটের ডজন খানেক ইয়াবার মামলা থাকার পরেও তারা বেপরোয়া। বিভিন্ন সময় ওয়ারেন্ট মামলায় পলাতক থাকলেও এখনো প্রতিদিন কৌশলে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছ।
মামলা দিয়েও কোন প্রকার থামানো যাচ্ছে না তাদের ইয়াবা ব্যবসা। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কক্সবাজার জেলার ডজন মামলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকা ভুক্ত আসামী সাহাব মিয়া হাজীর ছেলে ইয়াবা ডন আলী আহাম্মদ সিন্ডিকেটের দখলে ইয়াবা বাজার।
ইয়াবা ব্যবসা করে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়েছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র এবং এলাকার শতশত যুব সমাজকে। তাদের ফাঁদে পড়ে অনেক ছাত্র ও যুব সমাজকে জেলে যেতে হয়েছে। অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার ২৫ আগস্ট ২১ বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির সোনাইছড়ি বৈদ্যছড়া এলাকা থেকে ১লাখ ৩৫ হাজার ইয়াবাসহ সোনাইছড়ি ইউনিয়নের আনোয়ার হোসেন নামের এক মাদক কারবারি কে আটক করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা। উদ্ধারকৃত ইয়াবার এজহার মূলে আসামী হয় আনোয়ার হোসেন, মৃত এজহার মিয়া ছেলে মোর্শেদুল আলম টিটু, সাহাব মিয়া হাজির ছেলে আলী আহম্মদ, বাদশাহ আলম ছেলে আরমান, আবদু রশিদ ছেলে হামিদ, মৃত বদিউল হক ছেলে রাজ্জাক উদ্দীন, এজহার মিয়ার ছেলে বশির আহাম্মদ, আলী আহাম্মদ ছেলে আলফাজ মাহমুদ বিজয় এরা মাল গুলো পরিচালনা করে। এবং আনোয়ার হোসেনকে ৫০হাজার টাকার বিনিময় মাল বহনকারী হিসেবে নিযুক্ত করেছিল।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ইয়াবা ডন আলী আহাম্মদ ঘনিষ্ঠ জন শ্বশুর বাড়ির সম্বন্ধী রাজ্জাক উদ্দীন, ফারুক, জিয়া মিয়া এবং ভাই নুর মোহাম্মদ ও ছোট বোনের স্বামী রুবেল সহ আলী আহাম্মদ এর ছেলে বিজয়কে দিয়ে ২০১৮ সাল জেল থেকে নিয়মিত ইয়াবা ব্যবসা ও পাচার করে আসছিল।
২৫ আগস্ট’২১ ১লক্ষ৩৫ হাজার আলী আহাম্মদ, রাজ্জাক ও বিজয় ইয়াবা চালানের আগের দিন (২৪আগস্ট২১) আলী আহাম্মদ এর ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশের হাতে আটক হয় আলী আহাম্মদ এর আপন ছোট বোনের জামাই হলদিয়া পালং পাগলির বিলের রুবেল ও বহণ কারি কামাল।
একদিন পার হতে না হতে ২৫আগস্ট২১ আলী আহাম্মদ ১লক্ষ ৩৫ হাজার ইয়াবা মামলার আসামী হন আলী আহাম্মদ, রাজ্জাক ও বিজয় সহ ৮জন । এর মধ্যে ২ ও ৭ নং আসামী অর্থাৎ মোর্শেদুল আলম টিটু ও বশির আহাম্মদ আলী আহাম্মদ এর আপন বোনের দেবর চট্টগ্রামের ভাষায় তালতো ভাই ( বিয়াই)।
৬ ও ৮ নং আসামি রাজ্জাক উদ্দীন আলী আহাম্মদ এর স্ত্রীর আপন বড় ভাই রাজ্জাক ও আলী আহাম্মদ এর আপন বড় ছেলে বিজয় জানা যায়।
২০১৮ সালে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশের হাতে ইয়াবা নিয়ে ধরাপড়ে আলী আহাম্মদ যার জিআর মামলা নং ১৫/১৮। সে উক্ত মামলায় বান্দরবান জেল থেকে জামিনে এসে তিন মাসের ব্যবধানে ২০১৯ সালে কর্ণফুলী থানা পুলিশের হাতে আবারও ইয়াবা নিয়ে আটক হয় যার জিআর মামলা নং ২৫২/১৯। উক্ত মামলায় ২০২০ সালে চট্টগ্রাম কোর্টে থেকে জামিনে এসে আবার ইয়াবা বাজার দখলে নিয়েছে আলী আহাম্মদ ও তার সম্বন্ধী রাজ্জাক, ফারুক, জিয়া মিয়া, আলী আহাম্মদ এর ছোট ভাই নুর মোহাম্মদ, ছোট বোনের জামাই রুবেল, ছেলে আলফাজ মাহমুদ বিজয়। ২০২০ সালের শেষে ২০২১ সালের শুরুতে আলী আহাম্মদ জামিনে এসে নিয়মিত ইয়াবা পাচার করে আসছিল। ১৩ আগষ্ট নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ইয়াবা ডন আলী আহাম্মদ এর বিরুদ্ধে আরও একটি ইয়াবা মামলা রুজু হয়। যার জিআর মামলা নং ২৩৯/২০২১।
১২ দিন পার হতে না হতে ২৫ আগস্ট নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ১লক্ষ ৩৫ হাজার ইয়াবার আলী আহাম্মদ তার ছেলে আলফাজ মাহমুদ বিজয় ও সম্বন্ধী রাজ্জাক উদ্দীন তালতো ভাই টিটু, বশির সহ আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে আবারও একটি ইয়াবা মামলা হয় যার জিআরমামলা ২৫৬/২১।
আলী আহাম্মদ এর ৪টি ইয়াবা মামলা নাইক্ষ্যংছড়ি থানার জিআর মামলা নং ১৫/১৮, জিআর মামলা নং ২৩৯/২০২১, জিআর মামলা ২৫৬/২১, কর্ণফুলী থানা জিআর মামলা নং ২৫২/১৯, উখিয়া থানা জিআর মামলা নং ২৫/১৫, কক্সবাজার কোর্ট সি আর মামলা নং ২৩৯/২০১৬, উখিয়া থানার জিআর মামলা নং ৬৬/২১।
রাজ্জাক উদ্দীন এর ইয়াবা মামলা নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় জিআর মামলা নং ২৫৬/২১, হত্যা মামলা উখিয়া থানায় জিআর নং ৬৬/২১, জিআর মমলা নং২২৫/১৮, জিডির মামলা নং ১৪৯/১৪ সহ ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী, নারী নির্যাতন, অপহরণ সহ ডজনের অধিকা মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
বিজয় এর ইয়াবা মামলা নাইক্ষ্যংছড়ি থানার জিআর ২৫৬/২১, উখিয়া থানায় জিআর নং ৬৬/২১, একই পরিবারের বাবা, ছেল, মামা ৩ জনের ৪টি ইয়াবা মামলাসহ ১৩টি মামলা আছে বলে জানা যায়।
রাজ্জাক, আলী আহাম্মদ, বিজয় ৩ জনেরই মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন বলেন, আলী আহাম্মদ, রাজ্জাক, বিজয় পাশ্ববর্তী জেলা কক্সবাজারের উখিয়া থানার বাসিন্দা। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সীমান্তে ইয়াবা ব্যবসায় করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় এই পর্যন্ত মোট ৩টি ইয়াবা মামলা রয়েছে। রাজ্জাক ও বিজয় সরাসরি মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ রাখে কাজ করে।